ঢাকাশুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের-সবখবর

ব্যাপক উৎসাহ আর উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে পালিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ

প্রতিবেদক
বার্তা বিভাগ
এপ্রিল ১৪, ২০২৪ ১০:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

শেয়ার👍দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন

মনির হোসেন।। ব্যাপক উৎসাহ আর উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে পালিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ। রাজধানী ঢাকার প্রান কেন্দ্র রমনা বটমূলে রবিবার সকাল সাড়ে ৬ টায় ছায়ানটের সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বর্ষবরনের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় ধর্ম বর্ন গোত্র নির্বিশেষে সকল শ্রেনী পেশার বাঙালী একত্রিত হয়ে নেচে গেয়ে বাংলা নববর্ষকে বরন করে নেয়। রমনার বটমূলে বাঙ্গালীরা প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে। সকাল সাড়ে ৮ টায় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।

এদিকে,পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। ঐক্য, সাংস্কৃতিক গর্ব ও স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক শোভাযাত্রাটি ঐতিহ্যবাহী শিল্পীসত্তা ও চেতনার মন্ত্রমুগ্ধকর প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে সকাল ৯টা ১৮ মিনিটে আরম্ভ হয়। উৎসাহী অংশগ্রহণকারীদের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা শাহবাগ, ঢাকা ক্লাব এবং শিশু পার্কের মতো ঐতিহাসিক স্থান হয়ে ঢাকার ব্যস্ত রাস্তা অতিক্রম করে। বর্ণিল পোশাকে সজ্জিত ও প্রতীকী নিদর্শন সম্বলিত শোভাযাত্রাটি বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিধ্বনি করে এবং আনন্দ-উল্লাসে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়।

সৃজনশীলতা ও শৈল্পিক প্রকাশের লালনের জন্য পরিচিত চারুকলা অনুষদ সাংস্কৃতিক তাৎপর্যের সূচনা স্থান। অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আয়োজিত এই আয়োজনে বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যের প্রচার ও সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটির অঙ্গীকারের দৃষ্টান্ত ফুটে ওঠে। শোভাযাত্রাটি টিএসসিতে সমাপ্তির পথে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার বাতাস হর্ষধ্বনি, সংগীত এবং অংশগ্রহণকারী ও দর্শকদের সম্মিলিত উল্লাসে অনুরণিত হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা শুধু বাংলা নববর্ষের আগমনই উদযাপন করে না, প্রতিকূলতার মধ্যেও বাঙালি মানুষের সহনশীলতা ও চেতনার সাক্ষ্য বহন করে। আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে এই জাতীয় আয়োজন ঐক্য, স্থিতিস্থাপকতা ও একাত্মতার বোধকে লালন করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্ব নিশ্চিত করে। শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজকল্যান মন্ত্রী,সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী,ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, ঢাবির উপাচার্য, চারুকলা অনুষদের ডিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।

এর পর ঋষিজ শিল্পগোষ্ঠীর পরিবেশনায় চমৎকার সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলাসহ সবকিছুতেই যেন প্রাণের ছোঁয়া। ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে র‌্যাব ও পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে পহেলা বৈশাখের আয়োজন।

পহেলা বৈশাখকে ঘিরে বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রবীন্দ্র সরোবর ও মূল অনুষ্ঠানস্থল রমনার বটমূলকে ঘিরে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের পাশাপাশি সিসিটিভির আওতায় ছিল গোটা এলাকা। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ার ও ড্রোনের মাধ্যমে আশে-পাশের এলাকায় নজরদারি করা হয়েছে। ফলে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ন ভাবে বর্ষবরনের মূল আয়োজনগুলো সমাপ্ত হয়েছে।

অপরদিকে,বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি নতুন বছরে অতীতের সকল ব্যর্থতা-দুঃখ-গ্লানি পিছনে ফেলে সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার আহব্বান জানিয়ে কবি সুফিয়া কামালের ভাষায় বলেন, পুরাতন গত হোক! যবনিকা করি উন্মোচন, তুমি এসো হে নবীন! হে বৈশাখ! নববর্ষ।

 

 

শেয়ার👍দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন